বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ন

বাঘায় বর্ষবরণ উৎসবে ফড়িং এর মঙ্গল শোভাযাত্রা, পুরনো সব দূরে সরিয়ে নতুন বীণায় মেতেছে সবাই

বাঘা (রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ

পুরনো সব দূরে সরে বাজুক নতুন বীণা। ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যর অঙ্গীকারে পহেলা বৈশাখের, এসো হে বৈশাখ… গানে গানে মেতে উঠে উপজেলাসহ গ্রামাঞ্চল। শত দুঃখ, কষ্ট, অভাব, অস্থিরতা, রাজনৈতিক ডামাডোল আর বিপর্যয়কে পায়ে দলে বাঙালির শাশ্বত-সুন্দর ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে নানা রূপে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে রাজশাহীর বাঘায়। সকাল ৮টায় বের করা হয় মঙ্গল শোভা যাত্রা।

আবহমানকালে বাঙালির লোক ঐতিহ্যের বিশাল আকারের ফড়িং, পালকি, ডামি, ঢোল, তবলা, একতারা, হরেক রঙের মুখ ও মুখোশ, ফুল ও পরি প্রকৃতির রঙ তুলিতে সাজানো শোভাযাত্রাটি উপজেলা শহীদ মিনার চত্বর থেকে পৌরসভার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে একই স্থানে গিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি, আ’লীগের উপজেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল,বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক,সহকারি কমিশনার (ভ’মি) যোবায়ের হোসেন,অফিসার ইনচার্জ রেজাউল হাসান রেজা,অধ্যক্ষ নছিম উদ্দীন,মাসুদ রানা তিলু,প্রভাষক ওয়াহেদ সাদিক কবীর,শিক্ষক বাবুল ইসলাম প্রমুখ।
পান্তা উৎসবে, খাবারের তালিকায় ছিল,রুই মাছ, ভর্তা-ডালসহ বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পদ। অনেকেই খেয়েছেন পান্তা-ইলিশ। পরে গ্রামীণ খেলাধূলা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বটতলায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এদিকে বিকেল ৫টার মধ্যে সকল অনুষ্ঠান শেষ করার ঘোষনা দেয় প্রশাসন। অনুষ্ঠানের টাইমফ্রেমকে সংস্কৃতিকর্মীরা বলেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার কথা। তারা বলছেন, অনুষ্ঠানে এ ধরনের শর্তারোপ মধ্যযুগীয় চিন্তায় তাচ্ছিল্য করার প্রয়াস।
সবকিছু মেনে নিয়ে প্রাণের এই উৎসবে অংশগ্রহন করেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতি সংগঠন, সামাজিক, ব্যবসায়িক, পেশাজীবী নানা সংগঠনের অগণিত মানুষ। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ, যুবক-যুবতী মেতে উঠে অনাবিল আনন্দে। বৈশাখকে ঘিরে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। ব্যবসায়ীরাও হালখাতা করে পুরনো হিসাব বুঝে নিয়ে, নতুন বছরে নতুন হিসাব খুলেন।

জানা যায়,ঐক্য আর সম্প্রীতির সেতুবন্ধনের অঙ্গীকার নিয়ে ২৩ বছর আগে স্থানীয় কিছু সাংস্কৃতিকমনা ব্যাক্তিদের উদ্যোগে বৈশাখ বরণ উৎসব শুরু হয় বাঘায়, শাহদৌলা কলেজ মাঠে। সেই থেকে প্রতিবছর এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সার্বজনীনভাবে সাংস্কৃতিমনা বিভিন্ন সংগঠন উদযাপন করে বৈশাখের উৎসব। সরকারি নির্দেশনার আলোকে এবার ভিন্নমাত্রায় উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বটতলা চত্বরে এর আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com